স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে বর্গা দেওয়ায় দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার স্বাদ জনগণ উপভোগ করতে পারেনি। যখন যারা ক্ষমতায় এসেছে, তখন তারাই ভারতের তাঁবেদারিতে লিপ্ত ছিল। আওয়ামী লীগের হাত ধরে এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব পাচার হলেও কোন সরকার সেই স্বাধীনতা উদ্ধারে কোন কাজ করেনি। বরং তারাও ভারতের ইচ্ছে পূরণে মরিয়া ছিল। আর সেই কারণে এই দেশের ছাত্র সমাজ এটি মেনে নেয়নি, তারা জীবন দিয়ে এই দেশ থেকে স্বৈরাচার খুনি হাসিনাকে বিতাড়িত করার মধ্যে দিয়ে ভারতীয় আধিপত্যবাদের হাত থেকে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব উদ্ধার করে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে।

বুধবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহারাজপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী গত ৫৪ বছর যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা কি দূর্নীতি বন্ধ করতে পেরেছে? তারা কি চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পেরেছে? তারা কি লুটপাট বন্ধ করেছে? তারা এইসব বন্ধ করতে পারেনি। বরং ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা এসব কাজে লিপ্ত ছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে তারা পাচার করেছিলো। এসবের প্রতিবাদের কারণে

জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের জুলুম- নির্যাতন ও কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে, জামায়াতে ইসলামীকে হামলা-মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। যারা নিষিদ্ধ করেছিলো তারাই এখন হারিয়ে গিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ফাঁসি দিয়ে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলো কিন্তু জামায়াতে ইসলামীকে দমিয়ে রাখা যায়নি। কারণ জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর দ্বীন কায়েমের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পর এখন আরেকদল উঠেপড়ে লেগেছে, তারা জামায়াতের বিরুদ্ধাচারণ শুরু করেছে, তারা মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। যাদের সাথে আমরা একসাথে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছি তারাই এইসব শুরু করেছে। তারা ৭১ নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছে। অথচ তাদের দলের নেতৃত্ব দিচ্ছে রাজাকারের ছেলেরা! আমরা তাদের বলে দিতে চাই, কাঁদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি কারো জন্য মঙ্গল নয়। জামায়াতে ইসলামী কাঁদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি করে না। তিনি, কাঁদা ছোড়াছুড়ি পরিহার করে গণমানুষের কল্যাণে রাজনীতি করতে সকল দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আমরা চাই, নির্বাচনের জন্য ৩০০ টি আসনেই আমাদের প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। যে সংস্কার আমরা চাই তা কোন নির্বাচিত সরকার এসে করবে না। আমরা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চাই, এটা আমরা জোর দাবি দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জানিয়েছি। কোন দলের বা ব্যক্তির চাপে সংস্কার ও গণহত্যার বিচার না করেই নির্বাচনের আয়োজন করলে জনগণ মেনে নিবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহারাজপুর ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা আব্দুল আলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জামায়াতে ইসলামী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা নায়েবে আমীর ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান, জেলা অফিস সেক্রেটারী অধ্যাপক গোলাম কবির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর আমীর হাফেজ গোলাম রাব্বানী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা আমীর হাফেজ আব্দুল আলীম, সদর উপজেলা প্রকাশনা সম্পাদক মো. আকতারুল ইসলাম সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।