বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, মহান স্বাধীনতার জন্য রণাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে দেশের জন্য রক্ত দিয়েছিলেন। অসংখ্য মানুষ আত্মত্যাগ স্বীকার করেছিলেন। তাদের ত্যাগে আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, আমরা লাল-সবুজের পতাকা ও মানচিত্র উপহার পেয়েছি। গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার, আমাদের ভাত-কাপড় ও বাসস্থান তথা মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমরা যে স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলাম আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও তা অর্জিত হয়নি। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের তিনটি মূলমন্ত্র সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার আজও অর্জিত হয়নি। অধিকারের ক্ষেত্রে, ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে আজও বাংলাদেশে সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখনো ফুটপাতে কেউ না খেয়ে মরছে অপরদিকে অনেকেই সম্পদের পাহাড় গড়ছে। আজকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নাই। মানুষ ভোট প্রদানে উৎসাহ হারিয়ে নির্বাচন বিমুখ হয়ে গেছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে আজ মানুষের বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে বিভেদ তৈরি করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তিতে আজ জাতির মধ্যে বিভাজন তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার মূলমন্ত্র সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার সেইদিন প্রতিষ্ঠিত হবে যেদিন ওহীর ভিত্তিতে নাযিলকৃত আল-কোরআনের ইনসাফপূর্ণ বিধান সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে।
আজ ২১শে মার্চ ২০২১ রবিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূতি উপলক্ষে ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের মাঝে আত্মকর্মসংস্থান মূলক উপকরণ বিতরণ ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মু. দেলাওয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য যুবনেতা কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী দক্ষিণের শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুস সালাম, মুগদা থানা আমীর মতিউর রহমান, মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, শ্রমিকনেতা সোহেল রানা মিঠু, মাহবুবুর রহমান, জামায়াত নেতা শাহীন আহমদ খান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহান স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে দেশব্যাপি ব্যাপক কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াত আজকে ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের মাঝে কিছু আত্মকর্মসংস্থানের জন্য আর্থিক সহযোগিতা রিকশা-ভ্যান ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করছে। সেই সাথে আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার আসায় একটি আদর্শবাদী দল হিসেবে জনগণের মাঝে দাওয়াত এবং সেবার আদর্শ নিয়ে এসব কাজ করে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রত্যাশিত আমাদের সামাজিক সুবিচার আজও অর্জিত হয়নি। সংবাদপত্রের রিপোর্ট গবেষণায় প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশে হিন্দুদের যত সম্পত্তি দখল ও তাদের উপর জুলুম-নির্যাতন যারা করেছে তারা মূলত আওয়ামীলীগ বা বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের লোক। অথচ সরকার সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনায় মূলত বিরোধী দলকে দমন করার প্রয়াস চালাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে সরকারকে এই অপচেষ্টা বন্ধ করার আহবান উদাত্ত জানাচ্ছি। সংখ্যালঘুদের উপর এসব হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের জাতির সামনে ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা দরকার।
সভাপতির বক্তব্যে জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধন করে এই দেশকে প্রকৃত স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সংগঠনের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই দেশ গঠনে একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ এবং বসবাসের উপযোগী একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি আমরা। সেই লক্ষ্যে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে রিক্সা ভ্যান ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করে আমরা মানুষের পাশে থাকতে চাই। আগামী দিনেও আমাদের এই কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।