বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, আওয়ামী অপশক্তির দোসরদের পরিকল্পিতভাবে সরকারের প্রশাসন সহ বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। তাদেরকে এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে এবং এক মন্ত্রণালয় থেকে অন্য মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের দোসররা বাংলাদেশের রন্ধে রন্ধে প্রবেশ করছে। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের যে অর্জন, সেই অর্জনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের ফসল এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এব্যাপারে সর্তক ও সজাগ হতে হবে। ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোশরদের আর কোন চক্রান্ত এদেশের জনগণ সফল হতে দেবে না।
আজ (১২ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর হাতিরপুলের চায়না কিচেন চায়নিজ রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নিউমার্কেট থানার উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সম্মেলন ২০২৪ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও নিউমার্কেট থানা আমীর মাওলানা মুহিব্বুল হক ফরিদ এর সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মো. গোলাম ছরওয়ারের সঞ্চালনায় উক্ত কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য ও ধানমন্ডি-নিউমার্কেট জোন পরিচালক প্রকৌশলী শেখ আল আমিন, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক নুরন্নবী মানিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, আব্দুর রহমান রাজু, মতিউর রহমান মুন্নাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে এদেশের মানুষ নতুন বাংলাদেশ পেয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রমের দিকে সেই জনতা তাকিয়ে আছে। যদি আপনারা ব্যর্থ হন তবে বাংলাদেশ ব্যর্থ হবে। ফ্যাসিবাদের দোসর বা অন্য কোনো ষড়যন্ত্রকারীকে যদি আপনারা কোন সুযোগ করে দেন তার পরিণতি শুধু আঠারো কোটি মানুষ ভোগ করবে না বরং আপানাদেরও ভোগ করতে হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সৎ ও যোগ্য নের্তৃত্বের মাধ্যমে একটি সুখি সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলতে চায়। একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায়, যাতে ১৮ কোটি মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। এমন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে মানুষ মন খুলে কথা বলতে পারবে, সবার ভোটাধিকার থাকবে, মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে এবং ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি দায়িত্বশীল সংগঠন। দেশের যেকোনো প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে যে কোন ধরনের বিপদের সময় কর্মসূচি হিসেবে জামায়াতের আমীরসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ছুটে চলে যায়। জামায়াতে ইসলামী বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে ছিলো, আছে এবং থাকবে।
তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা তার ষোল বছরের শাসনামলে বাংলাদেশকে একটি তলাবিহীন রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আজ যেখানে হাত দেওয়া হচ্ছে সেখানেই দুর্নীতি আর রাহাজানী। মানুষের মধ্যে নৈতিকতা না থাকলে একটি যোগ্য দেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে না পারলে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে না।
এসময় শহীদ আব্দুল ওয়াদুদ এর স্ত্রী শাহনাজ পারভিন এবং শহীদ মোবারক হোসেনের পিতা রমজান আলীর বক্তব্যে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। নিহত প্রত্যেক পরিবারের সদস্যরা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান।