বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ক্ষমতার মোহ স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার প্রশাসনকে অন্ধ করে দিয়েছিল। আওয়ামী সরকার বুঝে গিয়েছিল এদেশে তাদের আর স্বাভাবিক রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। তাই ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ সকল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে মাঠে নামিয়ে তারা এদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। তারা রাষ্ট্র শক্তিকে ব্যবহার করে জনগণের নিরাপত্তার পরিবর্তে গণহত্যা চালিয়ে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলো। অত্যন্ত নির্দয়ভাবে ছাত্র জনতার বুকে গুলি চালিয়ে শহীদদের রক্তের উপরে নিজেদের ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করতে চেয়েছিল। এমনকি পতন হওয়ার আগের দিনও এই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশে শতাধিক মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ৫ আগস্ট ছাত্র জনতা যখন বিজয় মিছিল করছে তখনও আওয়ামী প্রশাসন ও সন্ত্রাসীরা মানুষ হত্যা করেছে। প্রতিটি হত্যার বিচার করা হবে, তা রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, অসংখ্য শহীদের রক্তের ওপরে দাঁড়িয়ে আমরা নতুন এক স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমাদের এসব শহীদদের যথাযথ মর্যাদা দিয়ে দেশ গড়ার কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের থানা ও পেশাজীবী বিভাগীয় দায়িত্বশীল সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর যথাক্রমে আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলওয়ার হোসেন, মুহাম্মদ কামাল হোসাইন ও ড. আবদুল মান্নান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, মাওলানা ফরিদুল ইসলাম, শামসুর রহমান, এডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, ড. মোবারক হোসেন, আব্দুস সালাম, মাওলানা মোশাররফ হোসেন, শেখ শরীফ উদ্দিন, আব্দুর রহমান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, অধিকার বঞ্চিত মানুষ দীর্ঘদিন পরে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। ছাত্র জনতার এই অভ্যুত্থানের সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দিতে জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীলদেরকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বাকশালের প্রেতাত্মারা ছাত্র জনতার এই অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করতে বিভিন্ন বাসা বাড়ি, সরকারী স্থাপনায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেস্টা করছে। জনগণ ও প্রশাসনকে সাথে নিয়ে তাদেরকে শক্ত হাতে প্রতিহত করতে হবে। আধিপত্যবাদী শক্তি ও কুচক্রী মহল দেশকে অস্থিতিশীল ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ তাদের সেই অপচেষ্টা কখনো বাস্তবায়ন হতে দেবে না। এদেশে সংখ্যালঘু বা সংখাগুরু বলে কিছু নেই, আমাদের একটিই পরিচয় আর সেটা হলো আমরা সবাই বাংলাদেশী। কেউ যেন আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য তিনি সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানান।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। এখন দেশকে গড়তে হবে। দেশকে অর্থবহ, স্থিতিশীল ও উন্নয়নের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে দল-মত নির্বিশেষে কাজ করতে হবে। ফ্যাসিবাদের সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত নস্যাৎ করতে ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকতে হবে।