মোঃ নূরুল ইসলাম বুলবুল এর জীবনী
নূরুল ইসলাম বুলবুল গণমানুষের বৃহত্তম সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতি সচেতন একজন নাগরিক হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের সাথে জড়িত হন। তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন দায়িত্বে ও সর্বশেষ নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। তাঁর নিজ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
জন্ম ও পারিবারিক জীবন:
জনাব মোঃ নূরুল ইসলাম বুলবুল (Md. Nurul Islam Bulbul) এর পিতার নাম মরহুম অধ্যাপক মোহাম্মদ ইসরাইল এবং মাতার নাম মোসাঃ নুরজাহান বেগম নুরী। তিনি ১৯৬৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী রোজ বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর থানার রেহাইচর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বর্তমান ঠিকানা: ৪৮/১, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ এবং স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: আঙ্গারিয়াপাড়া, ডাকঘর: নমোসংকরকাঠী, থানা: চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, জেলা: চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তিনি জন্মসুত্রে একজন বাংলাদেশী নাগরিক। ধর্মীয়ভাবে তিনি সুন্নী ভাবধারার একজন একনিষ্ট মুসলিম যিনি ব্যক্তিগত জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামী জীবনাচরণ মেনে চলেন এবং চলার চেষ্টা করেন। তিনি বাংলাদেশসহ পুথিবীতে সর্বশ্রেষ্ঠ জীবনব্যবস্থা ইসলামকে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে দেখতে চান।
তাঁর পিতা মরহুম অধ্যাপক মোহাম্মদ ইসরাইল ছিলেন এলাকার একজন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, শিক্ষাবিদ এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক। তিনি পেশাজীবনে কৃষ্ণগোবিন্দপুর ডিগ্রী কলেজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর প্রাক্তন অধ্যক্ষ। শিক্ষাবিদ পিতা এবং সুগৃহিনী মমতাময়ী মায়ের হাতেই জনাব মোঃ নূরুল ইসলাম বুলবুলের প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি হয়। তাঁর দাদা ছিলেন মরহুম সিদ্দিক মোল্লা যিনি পেশাগত জীবনে ব্যবসায়ী ও কৃষক ছিলেন। তাঁর নানা ছিলেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মরহুম আলহাজ্ব মাওলানা সুজাউদ্দীন (রহ.) ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হেফজুল উলুম ফায়েজা খানম কামিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ।
মোঃ নূরুল ইসলাম বুলবুলরা মোট ১০ ভাই-বোন যার মধ্যে ৬ জন ভাই ও ৪ জন বোন। ভাই-বোনদের মাঝে তাঁর অবস্থান সবার বড়। তাঁর ভাই-বোনেরা শিক্ষাজীবনে বড় বোন ছাড়া সবাই মাস্টার্স পাশ করেছেন এবং ব্যক্তিগত জীবনে স্ব স্ব বিভিন্ন পেশায় কর্মরত রয়েছেন।
ব্যক্তিগত পারিবারিক জীবনে প্রবেশের অংশ হিসেবে মোঃ নূরুল ইসলাম বুলবুল ৮ জানুয়ারী ২০০৩ ইং তারিখে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী’র নাম কোহিনুর আখতার সীমা, তিনি ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন। তিনি একজন সুগৃহিনী এবং নিজের সংসার-বাচ্চাদের দেখাশুনার পাশাপাশি বর্তমানে একটি প্রাইভেট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষয়িত্রী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাদের ঔরসে রয়েছেন ৩ জন সন্তান (২ ছেলে ও ১ মেয়ে) যারা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে বিভিন্ন শ্রেণীতে পড়াশুনা করছেন।
শিক্ষাজীবন:
মোঃ নূরুল ইসলাম বুলবুল তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার রেহাইচর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। পরবর্তীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার হরিমোহন সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ৮ম শ্রেনীতে জুনিয়র বৃত্তি অর্জন করে মেধাবী ছাত্র বুলবুল মেধার স্বাক্ষর রাখেন। ১৯৮৩ সালের পাবলিক মাধ্যমিক পরীক্ষায় হরিমোহন উচ্চবিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগসহ মাধ্যমিক (এসএসসি) ডিগ্রি অর্জন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যায়ে তিনি নবাবগঞ্জ সরকারী কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৮৫ সালের পাবলিক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগসহ উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ডিগ্রি অর্জন করেন।
স্নাতক (অনার্স) পর্যায়ে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নবাবগঞ্জ সরকারী কলেজে অধ্যয়ন করেন এবং সেখান থেকে ১৯৮৭ সালে দ্বিতীয় বিভাগসহ বিএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) অধ্যয়নের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৯১ সালে দ্বিতীয় বিভাগসহ এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
ছাত্র আন্দোলন ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ:
পারিবারিক দ্বীনি পরিবেশের প্রভাব এবং পরিবারের ইসলামী আন্দোলন সংশ্লিষ্টতার প্রভাবে জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল কিশোর বয়সেই ইসলামী আন্দোলনের ভাবধারার ছাত্র সংগঠনের সাথে যুক্ত হন। ১৯৭৮ সালে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত পেয়ে তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সমর্থক হন, ১৯৮০ সালে ৮ম শ্রেণিতে পড়াকালীন সংগঠনের কর্মী হন, সাথী হন এইচএসসি ১ম বর্ষ পড়াকালীন ১৯৮৪ সালে এবং সংগঠনের সদস্য হিসেবে শপথ নেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএসএস অধ্যায়নরত অবস্থায় ১৯৮৮ সালে। তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন। শুরুতে শিশু সংগঠনে কাজ করেন, পরে স্কুল বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, ১৯৮৭ সালে সংগঠনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ কলেজ সভাপতি, ১৯৮৮ সাল চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর সভাপতি, ১৯৯৫ সালে (জুলাই-ডিসেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৬-৯৭ সালে তিনি সংগঠনের রাজশাহী মহানগরী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং সেশন শেষে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে দায়িত্ব পালনের জন্য সংগঠনের কেন্দ্রে যোগদান করেন। কেন্দ্রীয়ভাবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক, ১৯৯৯ সালে কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক, ২০০০ সালে সেক্রেটারি জেনারেল এবং ২০০১ সাল থেকে ২০০২ সালের শেষ পর্যন্ত নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিজয়:
নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে ভর্তির পর থেকে তিনি ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৮৫ সালের ১১ মে কুরআন দিবসে কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ১৯৯০ সালে রাকসু নির্বাচনে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের জিএস নির্বাচিত হন।
রাজনৈতিক জীবন ও জাতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ:
ছাত্রজীবন শেষ করার পরে এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালনের মেয়াদ শেষ করে তিনি ১লা জানুয়ারী ২০০৩ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন এবং সহযোগী সদস্যপদ লাভ করেন। পরবর্তীতে সেই মাসেই তিনি সংগঠনের কর্মী হন এবং ১৫ অক্টোবর ২০০৩ সালে তিনি সংগঠনে রুকন (সদস্য) হিসেবে শপথ নেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে তিনি বিভিন্ন সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন এবং করছেন।
২০০৩ সালে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর উত্তরা দাওয়াতি ইউনিট সেক্রেটারি এবং শেষের দিকে উত্তরা দাওয়াতি ইউনিট সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪-০৫ সালে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর গুলশান থানা আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি এবং ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসব দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি তিনি কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য,কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্যের দায়িত্বও পালন করেছেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ২০১৭ সালের শুরু থেকে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নির্বাচিত আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একইসঙ্গে বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সর্বোচ্চ ফোরাম কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং বিভিন্ন কমিটির দায়িত্বে রয়েছেন। পাশাপাশি ২০ দলীয় জোটের শরীক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অন্যতম সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
কর্মজীবনঃ নূরুল ইসলাম বুলবুল নবাবগঞ্জ সিটি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্যান এশিয়াটিক স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জাবালে নুর হাসপাতাল ও ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (BIU) এর রেজিষ্ট্রারের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু রাজনৈতিক ব্যস্ততা ও ব্যবসায়িক কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরী থেকে অব্যাহতি নেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি উদ্যোক্তা পর্যায়ের ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত হন। বর্তমানে একটি প্রতিষ্ঠিত এ্যাড ফার্মের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সামাজিক কার্যক্রম: তিনি নিজ গ্রামে আদর্শ শিশু সংগঠন RICO প্রতিষ্ঠা করে শিশু-কিশোদের শারীরিক ও মানসিক উৎকর্ষের পাশাপাশি লেখাপড়া ও গঠনমূলক কাজে নেত্বত্ব প্রদান করেন। বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ ও বিতরণ,চক্ষু শিবির ও খাল খননসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে তিনি নেতৃত্ব প্রদান করেন। নূরুল ইসলাম বুলবুল চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহাসিক কুরআন দিবসের শহীদ স্মরণে গঠিত আল কুরআন ফাউন্ডেশনের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি রাজশাহী মহানগরী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গরীব ও মেধাবী ছাত্রদের জন্য বৃত্তি প্রকল্প চালু করেন। তিনি ঢাকাস্থ ইসলামিক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এছাড়া ও অন্যান্য সামাজিক,সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে তিনি সম্পৃক্ত হয়ে সমাজের কল্যাণে প্রভূত ভূমিকা রেখে আসছেন।
সামাজিক ও জাতীয় আন্দোলন–সংগ্রামসমূহে অংশগ্রহণ:
জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল একজন সচেতন নাগরিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে বাংলাদেশের বিগত প্রায় ৩০ বছরে সংঘটিত অধিকাংশ যৌক্তিক এবং গণদাবীর রাজনৈতিক-সামাজিক আন্দোলনসমূহে অংশগ্রহন করে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন এবং ন্যায়ের পক্ষে শক্ত কন্ঠে আওয়াজ উঠিয়েছেন। তন্মধ্যে বিশেষ কয়েকটি আন্দোলনের নাম দেয়া হলো:
- ১৯৮৫ সালের ১১ মে কুরআন দিবসে কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
- ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে একজন ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
- ১৯৯৫ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে দেশব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনে তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
- তিনি ২০০০ সালে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির তিন সদস্যের মধ্যে তিনি অন্যতম।
- ২০০৪ সালে দেশব্যাপী জঙ্গীবাদবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে তিনি অংশগ্রহণ করেন।
- ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে তিনি অংশগ্রহণ করেন।
- ২০০৯-১০ সালে টিপাইমুখ বাঁধ আন্দোলনে তিনি অংশগ্রহণ করেন।
- ২০১৩ সালে সরকারের জুলুম নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন তিনি অংশগ্রহণ করেন।
- ২০১৪ সালে অংশগ্রহণমুলক নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে তিনি অংশগ্রহণ করেন।
- বাংলাদেশে ইসলামী দলসূহের মধ্যে ঐক্যের প্রক্রিয়াতে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন এবং রাখছেন।
- বাংলাদেশে তথাকথিত জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে তিনি বলিষ্ঠ অবস্থান নিয়েছেন এবং যুবসমাজ যেন জঙ্গীবাদে জড়িয়ে না পড়ে সেজন্যে তিনি সামাজিক সচেতনতা কর্মসূচীসমূহে অংশগ্রহণ করছেন।
- বিভিন্ন সময়ে কাশ্মীর, ফিলিস্তিন, বসনিয়া, চেচনিয়া, সিরিয়া, আফগানস্থান, মিশর সহ বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রে আগ্রাসন ও মুসলিমদের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে তিনি কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেছেন।
- এছাড়াও অন্যান্য ইস্যুতে সংঘটিত এবং ঘটমান আন্দোলন সংগ্রামে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে।
জুলুম–নির্যাতন এবং কারাবরণ:
ছাত্রজীবনে অন্যায় অসত্যের কাছে মাথা নত না করায় তাকে ১৯৯৩ সালের মে মাসে গ্রেফতার করা হয়। সেসময় ছাত্রজীবনের মুল্যবান প্রায় সাড়ে তিনমাস তাকে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি জীবন-যাপন করতে হয়। এর আগে তিনি ১৯৮৮ সালে এবং পরে ১৯৯৮ সালেও তিনি মিথ্যা রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার হন। রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের কারণে তাঁর জীবনের উপর বহুবার আঘাত আসে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে আওয়ামি লীগের লগি-বৈঠার তান্ডবের শিকার হয়ে তিনি মারাত্মকভাবে জখম হন এবং দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে থাকেন। ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি সরকারের জুলুম নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দানকালে পুলিশ তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার উপর গুলি চালায়। প্রাণে বেঁচে গেলেও মারাত্মভাবে তিনি জখম হন। দীর্ঘদিন তিনি পুলিশের মিথ্যা মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আহত অবস্থায় দিন অতিবাহিত করেন। সরকারের জুলুমের কারণে তিনি ঠিকমত চিকিৎসাও নিতে পারেননি। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য উঠেপড়ে লাগে। একে একে তার নামে দেয়া হয় অসংখ্য মিথ্যা মামলা যা আওয়ামি সরকারের আমলে রাজনৈতিক মামলা নামে পরিচিত। সরকার তাকে জনবিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্যে ২০১৭ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে এবং বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় তাকে এরেস্ট দেখাতে থাকে। পরে দীর্ঘ ৭ মাস কারাবরণের পরে তিনি উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় জামিন পান। বর্তমানেও তাকে পুনরায় হয়রানি করার উদ্দেশ্যে গ্রেফতার করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন সময় তার বাসা এবং অফিসে অভিযান চালাচ্ছে যা মানবাধিকার এবং আদালতের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তাঁর নামে দায়ের করা পুরাতন মিথ্যা রাজনৈতিক মামলাগুলোরি সবকটিতে তিনি বেকসুর খালাস অথবা অব্যাহতি পেয়েছেন। তবে বিগত ১০ বছরে আওয়ামি সরকারের আমলে দায়ের করা মিথ্যা রাজনৈতিক মামলাগুলো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে যেগুলোতে তিনি ন্যায়বিচার পেলে নিঃশর্তভাবে বেকসুর খালাস পাবেন বলে আশাবাদি।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিচরণ: ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রসমাজের ভূমিকার প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট শাহাবুদ্দিন আহমেদের আয়োজনে রাকসু ও হল সংসদের নেতৃবৃন্দের ভারত সফরকালে হল সংসদের জিএস হিসেবে তিনিও ভারত সফর করেন। ২০০১ ও ২০০২ সালে তিনি পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গমন করেন। তিনি ২০০১ সালে WAMY- এর উদ্যোগে World Youth Conference এ যোগদানের উদ্দেশে মালয়েশিয়া গমন করেন। ২০০২ সালে WAMY- এর উদ্যোগে রিয়াদে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বার্ষিক সম্মেলনে Muslim Youth and Globalization শীর্ষক কনফারেন্সে যোগদান করেন। এছাড়াও তিনি মদিনা, জেদ্দা ও মক্কা সফর করেন ও উমরা পালন করেন। একই সময় রিয়াদে অনুষ্ঠিত Asian Federation of Muslim Youth- এর কার্যকরী কমিটির সভায় যোগদান করেন। এসব সফরকালে তিনি বিভিন্ন মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের সাথে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়ের করেন।
লেখালেখি ও প্রকাশনা:
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বক্তৃতা, বিতর্ক, প্রবন্ধ লেখা, পত্র-পত্রিকা সম্পাদনা ও বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করেছেন যা জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রকাশিত হয়েছে।